প্রাচীনকাল থেকে দিনাজপুর জেলা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক এবং শিক্ষার দিক থেকে অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় অনুন্নত। বরেন্দ্র ভূমির উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে দিনাজপুর আবহমান কাল থেকে অখন্ড জনপদ হিসেবে অবস্থিত। হিন্দু আমলে দিনাজপুরের শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে আমরা খুব তথ্য পাই। দিনাজপুরের ব্রাক্ষণদের শিক্ষা ক্ষেত্রে কোন বাধা না থাকলেও স্থানীয় আদিবাসীদের অতি নিম্নবর্নের মনে করায় এখানে বিরাট জনগোষ্ঠী বহুকাল প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বাইরে ছিল। নবাবী আমলে প্রাথমিক বাংলা শিক্ষা দেওয়া হতো গ্রামীন পাঠশালা সমূহে আর সংস্কৃত প্রথম পাঠ দেওয়া হতো চতুষ্পাঠীতে। দিনাজপুরে চতুষ্পাঠীকে চৌপারী বলা হতো। বাংলার মুসলিম রাজত্বের প্রথম দিকে সার্বজনিন শিক্ষার বাহন হিসেবে মসজিদের পর পর মক্তবের অস্তিত্বের কথা জানা যায়।
ব্রিটিশ শাসনামলে বেঙ্গল স্কুল পরিদর্শক রিপোর্ট-১৮৭৩ হতে দেখা যায় যে, দিনাজপুর জেলায় একটি উচ্চ মাধ্যমিক ৩০টি মাধ্যমিক ৩৭৬টি প্রাইমারী ০৩টি বালিকা বিদ্যালয়সহ মোট ৪১১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কথা জানা যায়, যা তৎকালীন রাজশাহী শিক্ষা সার্কেলের মধ্যে সর্ববৃহৎ। ১৭৬৫ সালে ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর দেওয়ানী লাভের প্রায় ১০০ বছর পর ১৮৫৪ সালে দিনাজপুরে প্রথম ইংরেজী বিদ্যালয় (দিনাজপুর জিলা স্কুল) প্রতিষ্ঠা হয় দিনাজপুরের রাজা তারকনাথের প্রদত্ত এক বিল্ডিং এ। ১৮৫৬ সালে এটি সরকারী বিদ্যালয়ে পরিনত করা হয়। ৩০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ০৪টি বিদ্যালয়ে ইংরেজী পড়ানো হতো এবং বাকী ২৬টি ছিল মাধ্যমিক ভার্নাকিউলার স্কুল। যার মধ্যে ০৭টি ছিল সরকারী স্কুল, ১৭টি অনুদান প্রাপ্ত এবং ০২টি অনুদান প্রাপ্ত নাইট স্কুল। তৎকালীন সময়ে ০৩টি বালিকা স্কুল ছিল বলে জানা যায়। দিনাজপুর শহরে অবস্থিত বালিকা স্কুলটি ১৮৬৯ সালে স্থাপিত হয় এবং ১৯৬১ সালে সরকারী বালিকা স্কুলে পরিনত হয়।দিনাজপুর জেলার তৎকালীন সময়ে অন্যান্য স্কুল সমূহের মধ্যে রয়েছে কেরি মেমোরিয়াল নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৭৯৯), দিনাজপুর পৌরসভা স্কুল (বাংলা স্কুল), দিনাজপুর জুবিলী হাই স্কুল,সারদেশ্বরী বালিকা বিদ্যালয় (১৯২৭), সুজাপুর হাই স্কুল(১৯১৯), রাজারামপুর হাই স্কুল(১৯১০)। বর্তমানে দিনাজপুর জেলার ১৩টি থানায় ১৪৪টি নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৫১৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১৭টি স্কুল ও কলেজ, ৫৭টি স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসা, ২৩০টি দাখিল মাদ্রাসা, ৩৫টি আলিম মাদ্রাসা, ৪১টি ফাজিল মাদ্রাসা, ০৭টি কামিল মাদ্রাসা, ৮১টি কলেজসহ ২৭টি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে ০১টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ০১টি মেডিকেল কলেজ, ০১টি পলিটেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট, ০১টি শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট।
আধুনিক ও যুগোপযোগী শিক্ষা ছাড়া আত্বনির্ভরশীল,দক্ষ ও মর্যাদা সম্পন্ন জাতি গঠন সম্ভব নয়। । তথ্য-প্রযুক্তি আজকের শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে অত্যন্ত ঘনিষ্ট ভাবে জড়িত। পৃথিবীর সকল দেশ জুড়ে প্রযুক্তির ব্যবহার বিস্ময়কর ভাবে বেড়ে চলছে। দক্ষ ও যোগ্য মানব সম্পদ তৈরীর লক্ষ্যে সরকার ২০১০ সালে প্রণীত জাতীয় শিক্ষানীতিতে ৬ষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযু্িক্ত বিষয়টিকে বাধ্যতামূলক করেছেন। এ প্রত্যয় ও প্রনোদনা থেকেই জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ প্রণীত হয়। এ শিক্ষানীতিতে বিজ্ঞান,তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি,কারিগরী শিক্ষা ,ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে সকল সরকারি-বেসরকারি দপ্তর সমূহকে ডিজিটাল পদ্ধতির আওতায় আনা হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় সরকারের সকল পর্যায়ে ICT এর বিকাশ,উন্নয়ন ও ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কাজকে এগেয়ে নাওয়ার লক্ষে এবং তথ্য-প্রযুক্তির সুবিধা ব্যবহার করে শিক্ষা অফিস কতৃক এর আওতাধীন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষে্ আমরা জেলা শিক্ষা অফিসের ডিজিটাল র্ভাসন শুরু করলাম । আমাদেগর দাপ্তরীক কাজ গুলোকে আরো গতিশীল করতে এবং যথাসময়ে আমাদের বার্তা গুলো আমাদের আওতাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোকে পৌঁছে দিতে সক্ষম হব ইনশাআল্লাহ।